Ticker

6/recent/ticker-posts

Ad Code

ইসলামের নির্দেশনায় স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব নিরসনে করণীয় – মিজানুর রহমান আজহারী

 স্বামী-স্ত্রীর ভুল বুঝাবুঝি হলে করণীয়

ইসলামের নির্দেশনায় স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব নিরসনে করণীয়

বর্তমান মূর্খতার যামানায় দেখা যায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হলেই গালি, গালাজ, মারধোর এবং এক পর্যায়ে তালাক দিয়ে দেয়। এটা মারাত্মক মূর্খতা। এরূপ ক্ষেত্রে ধৈর্য, সবর, নসীহত এবং সংশোধনের রাস্তা অবলম্বন করাই শরী’আতের নির্দেশ। জায়িয কাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ হলো তালাক, আমাদের সমাজে যারা দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ, তারাতো মা-বাবা, স্ত্রী-পুত্রের হক সম্পর্কে কিছুই জানে না। বিয়ে করলো, স্ত্রীর পক্ষ থেকে মেজাজের খেলাফ কিছু হয়ে গেলে, ব্যস এক সাথে তিন তালাক দিয়ে দিল, স্ত্রীকে হারাম করে দিলো। আবার যখন মেজাজ স্বাভাবিক হলো, তখন দিশেহারা হয়ে ভ্রান্ত মতবাদপন্থীদের কাছে গিয়ে কয়েকশত টাকা ফি দিয়ে বিয়ে হালাল করে নিয়ে এসে বলেঃ রাগের মাথায় তালাক দিয়ে তালাক হয় না বা এক সাথে তিন তালাক দিলে এক তালাক গণ্য হয় ইত্যাদি। এর দ্বারা স্ত্রীর সাথে সারাজীবন যিনা করার পথ খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুতরাং তালাকের পথে না গিয়ে সংশোধনের পথ অবলম্বন করতে হবে। মেজাজের খেলাফ শরী’আতে বিরোধী কোন কাজ যদি বিবি করে ফেলে, তাহলে তাকে নসীহতের দ্বারা বিষয়টি বুঝাতে হবে। আর ছোট-খাট সমস্ত ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে হবে। আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে কিছু কম বুদ্ধি দিয়েছেন। অনেক হিকমত ও ফায়দার কারণে কাজেই এ বিষয়টি খেয়াল রেখে সেভাবে ক্ষমা সুলভ আচরণ অব্যাহত রাখতে হবে।

আরও পড়ুন ... ইসলামের চোখে নারীর অর্থ উপার্জন

 

নসীহতেও কাজ না হলে বিছানা আলাদা করে দিতে হবে একই ঘরের ভিতরে। সাধারণতঃ এই দ্বিতীয় পদ্ধতিতে কাজ না হলে, তাকে হালকা শাস্তি এমনভাবে প্রদান করতে হবেঃ যাতে শরীরের কোথাও যখম বা দাগ না হয়। এটাও যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে উভয়পক্ষের মুরুব্বীদের দ্বারা সালিশ বসাতে হবে। সালিশের দ্বারা এসব বিষয় মীমাংসা করতে হবে। এতেও যদি কোন কাজ না হয়, অর্থাৎ এই চার স্তর হয়েও যদি কোন ফায়িদা না আসে, তাহলে খুব ধীরে সুস্থে ভেবে চিন্তে একটা মাত্র তালাক দিবে। যখন বিবি হায়েজ থেকে পাক হবে এবং পাক হওয়ার পর একবারও বিবির কাছে যায়নি, তালাকটি এমন অবস্থায় হতে হবে। এক তালাক দিলে এক তালাক হয়ে যাবে। কিন্তু এ অবস্থায় স্ত্রী সংশোধন হয়ে গেলে পুনরায় বিয়ে দোহরানো এবং হিলা ব্যতীত মৌখিকভাবে স্ত্রীকে গ্রহণ করলেই স্ত্রী তার জন্য হালাল হয়ে যাবে।

 

তালাকের ব্যাপারে শরী’আতের মাস’আলা সম্বন্ধে চরম অজ্ঞতা আমাদেরকে একটা বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে রেখেছে। শরী’আতের বিরোধিতা করে বর্তমানে আমাদের দেশে আইন হয়েছে, রেডিও, টিভিতে প্রচারণা চলছে, ইংরেজদের মদদপুষ্ট এনজিওরা এরূপ প্রচার চালাচ্ছে যে, রাগের মাথায় তালাক দিলে তালাক হয় না। অথচ শরী’আতে বলে যে, হাসিমুখে বা ক্রোধান্বিত উভয় অবস্থাতেই তালাক প্রদান করলে তা কার্যকর হয়ে যায়। এটি একটা স্পর্শকাতর বিষয়।

 

উপরে সংক্ষিপ্তভাবে বিয়ের পূববর্তী ও পরবর্তী জীবন সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো। মহান রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে এসবের উপর আমল করে উভয় জাহানে কামিয়রাসূলুল্লাহ অর্জন করার তৌফিক দান করুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ