কয়েকটি লাভজনক কৃষি ব্যবসা
কৃষি ভিত্তিক ব্যবসার চাহিদা
যুগ-যুগ ধরে আছে ও থাকবে। প্রশিক্ষণ থাকলে আপনি নিজেও কৃষি পণ্যের ব্যবসা করে লাখপতি
হতে পারবেন। কৃষি কাজ করে লাভবান হওয়ার জন্য প্রয়োজন- কোন পণ্য নিয়ে চাষাবাদ করবেন
সেই সঠিক পণ্যটি নির্বাচন করা। এই লেখায় বর্তমানে চলমান এবং লাভবান হওয়া যাবে এমন
বেশ কয়েকটি কৃষি ব্যবসার আইডিয়া আছে। আমরা প্রতিটি ব্যবসার আইডিয়া বিভিন্ন পত্রিকা,
খবরে আসা সফল কৃষকদের থেকে নিয়ে এবং বাজারে যেসব পণ্যের চাহিদা বেশি সেগুলো থেকে যাচাই-বাছাই
করেছি।
সুতরাং, আপনি যদি কৃষি
ভিত্তিক ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে, নিচে থাকা ২০টি কৃষি ব্যবসার আইডিয়া থেকে যেকোনো
একটি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
-
১। ছাদ বাগানে
ব্যবসার আইডিয়াঃ
ছাদ বাগান বর্তমান সময়ে
জনপ্রিয় ব্যবসায়িক আইডিয়া। আপনি যদি শহরে এই কৃষি ভিত্তিক ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন,
তাহলে খুব দ্রুত লাভবান হতে পারেন। অনেকে শখের বশে ছাদ বাগানে ব্যবসা শুরু করে পরবর্তীতে
তা ব্যবসায় রূপান্তর করেছেন।
ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ছাদ
বাগান শুরু করার জন্য আপনাকে আপনার আশেপাশে থাকা কয়েকটি বিল্ডিং-এর ছাদ ভাড়া নিতে হবে।
আর যদি নিজের ছাদ থাকে তাহলে তো কথায় নাই।
ছাদে আপনি সবজি কিংবা ফলের
চাষ করতে পারেন। তাজা এবং ভেজালমুক্ত হওয়ার কারণে অনেক বেশি বিক্রি করে ভাল টাকা আয়
করতে পারবেন। মনে রাখবেন, ছাদ বাগানের ক্ষেত্রে সবসময় দামী এবং দুর্লভ ফল বা সবজির
ব্যবসা করে লাভবান হওয়া যায়। এছাড়া, আপনি অনলাইনেও ব্যবসা করতে পারেন।
২। জৈব সার উৎপাদন
ব্যবসাঃ
বিভিন্ন জীবদেহের অংশ বা ধ্বংসা-বেশ থেকে তৈরি করা হয় জৈব সার। গোবর, আর্বজনা, হাড়ের
গুড়া প্রভৃতি থেকে জৈব সার উৎপাদন করা হয়। বাংলাদেশে অনেক আগে থেকেই জৈব সার বাণিজ্যিকভাবে
উৎপাদন করা হয় এবং এই জৈব সার উৎপাদন করে অনেকে সফলও হয়েছেন। ২০১৬ সালে প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে জৈব সার উৎপাদনের সফলতার গল্প।
-
৩। মুক্তা চাষ
ব্যবসাঃ
মুক্তা খুব মূল্যবান এবং
দামি একটি রত্ন। অলংকার সহ আরও অনেক কাজে মুক্ত ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের আবহাওয়া
মুক্তা চাষের জন্য উপযোগী। এছাড়া, মিঠাপানি হওয়ার কারণে মুক্ত বহনকারী ঝিনুক চাষের
রয়েছে অপার সম্ভাবনা। ২০০ পিস মুক্তা চাষে আপনার ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হবে। আর
এটা বিক্রি করে আপনি ১ থেকে ২ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউট
মুক্তা চাষ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। মুক্তা চাষে আগ্রহী হয়ে থাকলে আপনি তাদের সাথে
যোগাযোগ করতে পারেন।
৪। মাশরুম চাষ
ব্যবসাঃ
সুস্বাদু এই খাবারটি আজ
থেকে ৪ হাজার বছর আগে মিসরে রাজকীয় ভাবে চাষাবাদ করা হত। কেননা, তারা এটাকে মানুষের
অমরত্বের উৎস মনে করতো। যাই হোক, কালের বিবর্তনে এর চাহিদা কেবল ঔষধের জন্য নয় বরং
নিয়মিত খাবার এবং রেস্টুরেন্টের অনেক খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
এই মাশরুম চাষ হতে পারে
আপনার জন্য লাভজনক ব্যবসা। বর্তমানে অনেক সুপার-শপ ও চাইনিজ রেস্টুরেন্ট বিদেশী মাশরুম
দিয়ে খাবার তৈরি করেন। এখন আপনি যদি রেস্টুরেন্ট মালিকদের সাথে কথা বলে, সেই মাশরুমগুলো
চাষ করেন, তাহলে আপনার একটা নির্দিষ্ট ক্রেতা তৈরি হয়ে গেল। ফলে লস হবার সম্ভাবনা থাকলো
না। আর সবথেকে বড় কথা মাশরুম মাত্র ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে বিক্রির উপযোগী হয়ে
যায়।
৫। ক্যাপ-সিকাম
চাষ ব্যবসাঃ
ক্যাপ-সিকাম ছাড়া রেস্টুরেন্টের
খাবার তৈরির কথা কল্পনা করা যায় না। সুতরাং, আপনি যদি ক্যাপ-সিকাম চাষ করেন। তাহলে,
বিক্রি করার বড় একটা খাত থেকে গেলো। এছাড়া, সুপার-শপগুলোতে আপনি ক্যাপ-সিকাম সরবার
করতে পারবেন। আর, আম-জনতা তো আছেই। আপনি যদি ২ একর জায়গায় ক্যাপ-সিকাম চাষ করতে চান
তাহলে, খরচ হবে আনুমানিক ৩ লাখ টাকা। আর এই ৩ লাখ টাকার ক্যাপ-সিকাম থেকে আয় করতে পারবেন
প্রায় ৫ লাখ টাকা।
৬। নার্সারির
ব্যবসাঃ
যতদিন চাষাবাদ থাকবে তত
দিন নার্সারির চাহিদা থাকবে। বর্তমানে শহর অঞ্চলে অসংখ্য মানুষ নার্সারি থেকে গাছ কিনে
থাকে। শহরে একটা নার্সারি দিতে পারলে কি পরিমাণ লাভ হবে, তা আপনি প্রতিবছর যে বৃক্ষ-মেলা
হয় সেখানে গেলেই বুঝতে পারবেন।
0 Comments